শাহীন বাবু : বুধবার ১৮ জুন ২০২৫ইং বেলা সোয়া ১১টার দিকে সচিবালয়ের বাদামতলায় কর্মচারীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে তা সচিবালয়ের বিভিন্ন ভবনের ফ্লোর ঘুরে ৬ নম্বর ভবনের নিচে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে রূপ নেয়। কর্মচারীরা ‘আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘ফ্যাসিবাদী কালো আইন মানি না,মানব না’,‘আপস না সংগ্রাম সংগ্রাম সংগ্রাম’,‘সারা বাংলার কর্মচারী এক হয়ে লড়াই করো’ ইত্যাদি স্লোগানে সচিবালয় প্রাঙ্গণ মুখরিত করে তোলেন।
কর্মসূচির নেতৃত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলাম সমাবেশে বলেন, “প্রত্যেকটি সরকারি কর্মচারী এই অধ্যাদেশ বাতিল চায়। কোনো ধরনের সংশোধন, সংযোজন বা পরিমার্জন আমরা মানব না। তিনি জানান, সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আলোচনার আমন্ত্রণ পাওয়া যায়নি। তবে সরকারি প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে যে, কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করে অধ্যাদেশ সংক্রান্ত সুপারিশ দেওয়া হবে।
নূরুল ইসলাম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “যারা পোস্টার ছিঁড়েছে, তাদের সিসিটিভির মাধ্যমে শনাক্ত করে পরিচয় প্রকাশ করা হবে। পোস্টার ও ব্যানার সচিবালয়ের সর্বত্র আবারও টাঙাতে হবে। একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন,“ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারকে চোরাবালিতে ফেলতে চান না। কিন্তু কিছু আমলা সরকারকে ফাঁদে ফেলার জন্য এই কালো আইন তৈরি করেছেন। তাদের দ্রুত প্রত্যাহার না করা হলে, বিভাগীয় সম্মেলনের চেয়েও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার কথা বলেন তিনি।
পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৯ জুন)২-২৫ইং সচিবালয়ের ৪ নম্বর ভবনের সামনে গণসংযোগ ও বিক্ষোভের ঘোষণা দেওয়া হয়। এছাড়া রোববার (২২ জুন) থেকে সারাদেশব্যাপী সরকারি কর্মচারীদের অংশগ্রহণে লাগাতার কর্মসূচিরও হুঁশিয়ারি দেন নূরুল ইসলাম।
সরকার গত ২৫ মে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ জারি করে, যেখানে বলা হয় চার ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনায় বিভাগীয় মামলা ছাড়াই কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুতি করা যাবে। এই বিধানকে কেন্দ্র করে কর্মচারীরা প্রথম থেকেই এর খসড়া বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। অধ্যাদেশ চূড়ান্ত হওয়ায় আন্দোলন আরও তীব্র হয়। তারা ঘণ্টাব্যাপী কর্মবিরতি, সমাবেশ, মিছিল এবং উপদেষ্টাদের কাছে স্মারকলিপিও দেন।
পরবর্তীতে কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ভূমি সচিবের নেতৃত্বে কয়েকজন সচিব এই দাবি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে পৌঁছে দেন। এরপর মন্ত্রিপরিষদ সচিব তা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অবহিত করেন। গত ৪ জুন অধ্যাদেশ পর্যালোচনার জন্য আইন উপদেষ্টাকে প্রধান করে একটি কমিটিও গঠন করা হয়। তবে এখনো আলোচনা বা সমঝোতার কোনো আনুষ্ঠানিক অগ্রগতি হয়নি।